ড্রোন প্রতিযোগিতায় ভারত, পাকিস্তান ঠেকাতে দেশীয় প্রযুক্তিতে জোর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তান ও চীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় পরিচালিত ড্রোন কর্মসূচির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভারত নিজস্ব সামরিক ও বেসামরিক ড্রোন খাতকে শক্তিশালী করতে ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে নয়াদিল্লি ৬ ও ৭ মে রাতে সীমান্ত পেরিয়ে বিমান হামলা চালায়। ওই ঘটনার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা বাড়ে, যা পরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছায়।
এই উত্তেজনার পর থেকে দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ড্রোন প্রযুক্তিতে প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়ে। ভারতের প্রতিরক্ষা ও বেসামরিক খাতে ড্রোন উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন বছর মেয়াদি ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের এই নতুন কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ড্রোন ছাড়াও এতে যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার, কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম ও ড্রোন-সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে। যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য জানায়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ভারতের পূর্ববর্তী ড্রোন প্রণোদনা প্রকল্পের তুলনায় এবারের বরাদ্দ দ্বিগুণেরও বেশি। ২০২১ সালে চালু হওয়া সেই প্রকল্পে ১২০ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছিল। নতুন উদ্যোগের আওতায় ২০২৮ অর্থবছরের মধ্যে ড্রোনের অন্তত ৪০ শতাংশ প্রধান উপাদান দেশেই উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারত।
গত সপ্তাহে প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং জানান, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় উভয় পক্ষ ব্যাপকভাবে ড্রোন ও কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করেছে। তার ভাষায়, “এই অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে, শক্তিশালী ও কার্যকর ড্রোন ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে দেশীয় উৎপাদন জোরদার করতেই হবে।”
ইতিপূর্বে ভারত সামরিক ড্রোনের জন্য অনেকাংশে ইসরায়েলের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে নতুন নতুন দেশীয় প্রতিষ্ঠান এখন সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন সরবরাহ করছে। যদিও মোটর, সেন্সর এবং ইমেজিং সিস্টেমের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের জন্য এখনও চীনের ওপর নির্ভরতা রয়ে গেছে।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে ভারত ড্রোন ও মানববিহীন আকাশযানে প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে পারে বলে পরিকল্পনা করছে।