ল্যাপটপের যত্নে করণীয়

তথ্য-প্রযুক্তির এই সময়ে, ল্যাপটপ ব্যবহার এখন আর কোন বিলাসিতা নয়। সময়ের দাবিতে বহনযোগ্য এই কম্পিউটার এখন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে চাকুরিজীবীদের সব সময়ের সঙ্গী। অফিস বা প্রতিষ্ঠান তো বটেই চলার সময়েও অনেকেই এখন ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। নিয়মিত যত্ন নিলে ল্যাপটপ অনেক দিন ভালো থাকে। কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখলেই ল্যাপটপকে টানা বেশ কয়েক বছর ভালো রাখা সম্ভব।
প্রয়াত সাংবাদিক এবং দেশে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখির পথ প্রদর্শক আবীর হাসান এক লেখায় এই ল্যাপটপের যত্ন নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে গেছেন। তার মতে, ল্যাপটপ যেহেতু সব সময়ের বাহন তাই এর নিয়মতি যত্ন নেয়া দরকার। এটিকে নিছক মেশিন মনে করলে হবে না। নানা ধরনের স্পর্শকাতর যন্ত্র দিয়ে তৈরি হবার কারণে প্রিয় ল্যাপটপ অবহেলার কারণে যে কোন সময় বিপত্তির শিকার হতে পারে।

যদি কিছু নিয়ম মেনে যত্ন করে ল্যাপটপ ব্যবহার করা যায় তাহলে ল্যাপটপটির স্থায়িত্ব স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। ভালো থাকতে পারে এর ব্যাটারি লাইফও। তাহলে, জেনে নেয়া যাক ল্যাপটপের যত্ন কীভাবে করতে হবে। প্রথমত- ল্যাপটপের উপর ভারী কিছু রাখা যাবে না। ল্যাপটপের উপর প্রান্তে ডিসপ্লে অংশ থেকে থাকে, তাই ভারী কোন কিছু রাখলে সেই ডিসপ্লেতে সমস্যা হতে পারে।

চতুর্থত- স্ক্রিন প্রোটেক্টরের সাথে সাথে কিবোর্ড প্রোটেক্টরও ব্যবহার করতে হবে। এতে করে কিবোর্ডের মধ্যে ধুলো জমবে না। এছাড়াও আপনি মাঝে মাঝে মিনি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়েও কিবোর্ড পরিষ্কার করা ভালো। পঞ্চমত- অনেকেই বাসার কাজের জন্যও ল্যাপটপ ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে চার্জার লাগিয়েই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ল্যাপটপ প্রস্তুত করা প্রতিষ্ঠানের দেয়া অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে হবে।
এই প্রধান চার বিষয় ছাড়াও, সরাসরি সূর্যের আলো পরে অথবা স্বাভাবিকের চাইতে গরম- এমন কোন স্থানে ল্যাপটপ রাখা যাবে না। প্রয়োজন নেই এমন সফটওয়্যার ল্যাপটপে ইন্সটল না করা। মাঝে মাঝেই সিস্টেম ক্লিনার সফটওয়্যার দিয়ে ল্যাপটপ কম্পিউটারটির হার্ডডিস্ক স্ক্যান করতে হবে। কোন রকম সিস্টেমজনিত ত্রুটি পেলে সিস্টেম কেয়ার অ্যাপ্লিকেশনগুলোই সেগুলো ফিক্স করে দেবে।

ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। সিস্টেমের সুরক্ষার জন্য ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাসের বিকল্প নেই।সরাসরি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক থেকে মিডিয়া ফাইল প্লে না করাই ভালো। ল্যাপটপের বিল্ট-ইন সিডি অথবা ডিভিডি রমে ভালো সিডি-ডিভিডি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজন না হলে ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই চালু করার কোন প্রয়োজনই নেই। ‘শাটডাউন’ ও ‘স্লিপের’ পরিবর্তে ‘হাইবারনেট’ অপশনে রাখাই ভালো।
ব্যাটারিতে ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখতে হবে। ল্যাপটপের ছোট ভেন্টিলেটর বা ফ্যানের সামনে যেন কোন প্রতিবন্ধকতা না থাকে। পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট থেকে ল্যাপটপটি ব্যাটারি অথবা চার্জে থাকা অবস্থায় ঠিক কত সময় পরে স্লিপ মোডে চলে যাবে বা মনিটর ডিম হবে, সে সেটিংসগুলো ঠিক করে রাখতে হবে। মনে রাখা ভালো স্ক্রিন সেভার কিন্তু ব্যাটারি সেভ করে না।
ল্যাপটপ যেহেতু বেশ গরম হয়ে যায়, তাই কুলার ব্যবহার করতে পারলে ভালো। সব আসল অ্যাক্সেসরিস ব্যবহার করতে হবে। ল্যাপটপের আশপাশে তরল পদার্থ ও খাবার রাখা যাবে না। পাওয়ার কর্ড টানাহেঁচড়া করে খোলা যাবে না। ল্যাপটপ বহনে সতর্ক হতে হবে, সঠিক ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এই টিপসগুলো অনুসরণ করলেই কিছুটা হলেও ল্যাপটপের উপকারে আসবে।