চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মরদেহ

লাবিবার মরদেহ পাওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অর্থনীতি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহী আমিন পূণ্য। তিনি সমকালকে বলেন, ‘লাবিবাদের বাসায় গিয়ে শুনি, জানালায় ওড়না দিয়ে ফাঁসি দিয়েছে সে। কিন্তু তার উচ্চতা এমন ছিল, চাইলে সহজেই পা মাটিতে রাখতে পারত। তাদের গৃহকর্মীর কাছে শুনি, দরজায় কেবল চাপ লক ছিল, ছিটকিনি ছিল না। জানালাও খোলা ছিল, যার পাশে অন্য বাসার জানালা দেখা যায়। ঘটনাটি কীভাবে ঘটলো বুঝতেছি না।’
লাবিবার মৃত্যুর আগের সময়ের আচরণে তেমন কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন চবি ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি রাফসান হোসেন আলভী। তিনি বলেন, ‘রোববার রাত সাড়ে ৯টায় একটি ভার্চুয়াল সেশনে অংশ নেয় লাবিবা। বেশ কিছু প্রশ্নও করেছিল। আচরণ ছিল স্বাভাবিক। রাত ১২টা ৪১ মিনিটে সে মেসেজ দেয়– আমি ৪ তারিখ আর ১৯ তারিখ বাদে সব সময় কাজ করতে পারবো, পরীক্ষাজনিত কারণে।’
লাবিবার সহপাঠী অর্থনীতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তনিমা বিনতে হোসাইন বলেন, ‘লাবিবা প্রথম বর্ষে ড্রপ খেলেও নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছিল। তবে অনেকদিন ধরেই বিষণ্নতায় ভুগছিল বলে আমাদের মনে হয়েছে। সে সবার সঙ্গে তেমন মিশত না। আমরা ধারণা করছি, হয়তো একাডেমিক চাপ থেকে এমন কিছু ঘটতে পারে।’
সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী বলেন, ‘দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ ও এক নারী চিকিৎসক। গিয়ে দেখি মরদেহ আগে থেকেই নামানো। জানালার গ্রিলে ওড়না প্যাঁচানো থাকলেও তা কাটা অবস্থায় ছিল। পরিবারের ভাষ্য, সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দরজা বাইরে থেকে লক দেখেন তাঁর মা ও বাবা। পরে তারা চাবি দিয়ে খুলে লাবিবাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।’
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা বলেন, ‘আমরা গিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় থাকলেও মরদহে মেঝেতে নামানো দেখতে পাই। মেয়েটির বাবা-মা জানান, সকালে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। চাবি দিয়ে খুলে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান এবং পরে ওড়না কেটে নিচে নামান। আমাদের প্রাথমিক ধারণা এটি আত্মহত্যা হতে পারে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।’