বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন | ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |১২ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম:
মামলার জট কমাতে আইনজীবীদের সহায়তায় মাঠে জাইকা ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের অর্ধবার্ষিক কুপন রেট ১০% ঘোষণা পুঁজিবাজারে পাঁচ বিমা কোম্পানীর অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ পুঁজিবাজারে সরকারি ও বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ব্যাংক এশিয়ার পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তর আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অর্ধবার্ষিকে মুনাফা বেড়েছে ৪৪.৭৭ শতাংশ রাজধানীতে ইউরোপা হাউজিং লিমিটেডের নতুন প্রকল্প  ইউরোপা রয়েল সিটির  নিজস্ব কার্যালয় উদ্বোধন আইএলএফএসএল-এর ক্রেডিট রেটিং প্রকাশ, দীর্ঘ মেয়াদে অবস্থান ‘বিবিবি-‘ বেসিক ব্যাংকের ‘উদ্ভাবন প্রদর্শন ও পুরস্কার প্রদান’ অনুষ্ঠিত ২১ কোম্পানির বোর্ড সভা কাল, আসছে ইপিএস ও ডিভিডেন্ড ঘোষণা

সর্বশেষ আপডেট:

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

এফবিসিসি আইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর বিশেষ সাক্ষাৎকার

দৈনিক পুঁজিবাজার: এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সম্প্রতি দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং ব্যবসায়িক পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি লাল তীর সিড, নর্থ সাউথ সিড, ন্যাশনাল ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। পাশাপাশি প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক সংকট এবং বেসরকারি খাতের অবস্থা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন।

দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি

মিন্টু বলেন, রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। রাজনীতি ভালো না হলে অর্থনীতিও ভালো হতে পারে না। ২০০৭ সাল থেকে দেশের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগ কমেছে, ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সরকারের সম্প্রসারিত মুদ্রানীতি ও বেসরকারি খাতের সংকুচিত মুদ্রানীতি অর্থনীতিতে দ্বৈত নীতি তৈরি করেছে, যা বেসরকারি খাতকে অবহেলিত করে তুলেছে। এলসি খোলা কঠিন হওয়ায় কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং সুদের হার বেড়ে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নির্বাচনের বাস্তবতা

মিন্টু বলেন, উন্নয়নের প্রচার হলেও গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবের কারণে প্রকৃতপক্ষে কোনো খাত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনকে তিনি প্রহসনমূলক আখ্যা দেন এবং বলেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। সরকার দলীয় ব্যক্তিদের দ্বারা রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা অর্থনীতিকে মুষ্টিমেয় ব্যক্তিদের ওপর নির্ভরশীল করে তুলেছে।

ব্যাংকিং খাতের সংকট ও সংস্কারের প্রস্তাব

ব্যাংকিং খাতে ঋণখেলাপির প্রবণতা বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন। সুদের হার বৃদ্ধি, মুদ্রার দাম বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের সংকট থেকে মুক্তি পেতে গভর্নরকে বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন, শুধু সততা দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না, প্রয়োজন সঠিক অর্থনৈতিক পদক্ষেপের।

শিল্প ও বাণিজ্য খাতের সমস্যা

মিন্টু বলেন, সম্পদ সৃষ্টিকারী ও সম্পদ অর্জনকারীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা না হলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের ওপর চাপ আরও বাড়বে। যারা সম্পদ অর্জন করে তারা বিনিয়োগ করে না, বরং সম্পদ বিদেশে পাচার করে। অথচ সম্পদ সৃষ্টিকারীদের ওপরই শাস্তির বোঝা চাপানো হচ্ছে, যা দেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক সংকট

মিন্টু বলেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের আওতায় বিভিন্ন খাতে ছোট ছোট সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। চাহিদা ও সরবরাহের অসামঞ্জস্যের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে, যা রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের কারণে নিয়ন্ত্রিত হয়। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের সহায়তা দিতে হবে।

ভবিষ্যতের রাজনীতি ও সংস্কার প্রস্তাব

তিনি বলেন, দেশের রাজনীতি যদি ঠিক করা না যায়, তাহলে অর্থনীতি বা অন্য কোনো খাতেও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তার রাজনৈতিক দল ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে, যা জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। জনগণের মতামত ছাড়া কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। এজন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

ব্যবসায়ীদের নামে মামলার প্রভাব

মিন্টু বলেন, ব্যবসায়ীদের নামে মামলা এবং বিনিয়োগে বাধার কারণে কর্মসংস্থান স্থবির হয়ে গেছে। তিনি মনে করেন, অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যবসায়ীকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক রাখা উচিত নয়। এতে তাঁর প্রতিষ্ঠান এবং তাতে কর্মরত শ্রমিকদের ক্ষতি হয়, যা সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সাক্ষাৎকারের শেষে মিন্টু বলেন, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক সংস্কার, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সম্পাদক ও প্রকাশক : সোয়েব মজুমদার

মোবাইল: +৮৮০ ১৭২৬ ২০২৮৩১

উপদেষ্টা: আলহাজ্জ লায়ন খান আকতারুজ্জামান এমজেএফ

ঠিকানা : ১০৯, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, কাকরাইল, ঢাকা- ১০০০।

ফোনঃ +৮৮০ ১৭২৬২০২৮৩১

ই-মেইল: dainikpujibazar@gmail.com

google.com, pub-1579532791932600, DIRECT, f08c47fec0942fa0