ইয়াঙ্গুন-টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্য সচলের উদ্যোগ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ স্থলবন্দরে বাণিজ্য পুনরায় সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের কারণ
গত ১৬ জানুয়ারি মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে পণ্যবাহী কার্গো বোট আটক করলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ২৩ দিন ধরে কোনো পণ্যবাহী বোট টেকনাফ বন্দরে আসেনি।
বাণিজ্য সচলে সরকারের পরিকল্পনা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “টেকনাফ স্থলবন্দর নৌ-পরিবহন, সমুদ্র বন্দর নাকি ল্যান্ডপোর্ট থাকবে, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হবে।”
ব্যবসায়ীদের অভিযোগের মধ্যে স্থলবন্দরে শ্রমিকদের মজুরি কম দেওয়া, অতিরিক্ত চার্জ আদায় এবং নানা অনিয়মের বিষয়টি উঠে এসেছে, যা তদন্ত করে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ব্যবসায়ীরা জানান,
- বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিটন পণ্য খালাসের জন্য ৬৯২ টাকা আদায় করলেও শ্রমিকদের মাত্র ১০০ টাকা প্রদান করে।
- শ্রমিকরা বাকি অর্থ দাবি করে, না দিলে মালামাল খালাসে বাধা দেয়।
- অন্য বন্দরের তুলনায় এখানে অতিরিক্ত খরচ নেওয়া হচ্ছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করছে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, “টেকনাফ স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করা হচ্ছে, অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হচ্ছে। আমরা এসব সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছি।”
উপস্থিত ব্যক্তিরা
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন—
- বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান
- কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল্লাহ ইয়ামিন
- ইউনাইটেড গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর খন্দকার জায়েদ আহসান
- টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী
- ওসি মো. গিয়াস উদ্দিন
- টেকনাফ স্থলবন্দরের ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের মহাব্যবস্থাপক জসীম উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
সমাধানের আশা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমি এখানে এসেছি, সমস্যা দেখছি। সীমান্ত বাণিজ্য সচলের জন্য সম্ভাব্য সমাধানের পথ খোঁজা হবে।”
ব্যবসায়ীদের আশাবাদ, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে সীমান্ত বাণিজ্য আবারও সচল হবে এবং টেকনাফ স্থলবন্দরের অনিয়মের অবসান ঘটবে।