সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম:

সর্বশেষ আপডেট:

প্রকাশ: বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪

‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ নামের প্রথমে ব্যবহার কি জায়েজ ?

হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। এটি শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত। এটিকে প্রেমময় ইবাদতও বলা হয়। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান হজ আদায় করেন।

লোকদেখানো কোনো ইবাদতই গ্রহণযোগ্য নয়। ছবি: সংগৃহীত

হজ একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। আর এমনভাবে যারা হজ করেন তাদের সম্পর্কে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর উদ্দেশে হজ করল এবং ওইদিন অশালীন কথাবার্তা, সহবাস ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল, সে নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরে আসবে যেদিন তাকে তার মা জন্ম দিয়েছিল। (বুখারি: ১৫২১)

আমাদের সমাজে দেখা যায়, হজ থেকে ফিরেই শুরু হয় নামের প্রথমে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ উপাধি ব্যবহারের বাড়াবাড়ি। নিজের পরিচয় দেন ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ বলে। ধর্মীয় সভা ও মাহফিলগুলোতে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ বিশেষণ ব্যবহার করা হয়। আবার অনেকে এ বিশেষণ ব্যবহার না করলে রাগও হয়। এখন প্রশ্ন হলো, এভাবে নামের শুরুতে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ ব্যবহার করা কি জায়েজ?

ইসলামের প্রতিটি আমল করা হয় একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। তার সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে যতো আমলই করা হোক, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে খুশি করার নিয়তে কোনো নেক আমল করাকে রিয়া, লৌকিকতা বা লোকদেখানো কাজ বলে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ লোকদেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার প্রভুর ইবাদতে কাউকে অংশীদার না করে।’ (সুরা কাহাফ: ১১০)

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিয়াকে ছোট শিরক বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক নিয়ে যতটা ভয় পাচ্ছি, অন্য কোনো ব্যাপারে এতটা ভীত নই।’

সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রসুল, ছোট শিরক কী? তিনি বলেন, ‘রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা। আল্লাহ কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের প্রতিদান দেয়ার সময় বলবেন, তোমরা পৃথিবীতে যাদের দেখাতে তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের কাছে তোমাদের কোনো প্রতিদান আছে কি না?’ (মুসনাদে আহমদ: ২২৫২৮)

আর হজের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে আল্লাহমুখী হওয়া। হজ পালনকারী ব্যক্তি ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক..।’ হে আল্লাহ আমি তোমার দরবারে হাজির। সবকিছু ত্যাগ করে আমি তোমাকে চাই। তোমার সন্তুষ্টিই আমার একমাত্র লক্ষ্য। কাজেই এ তালবিয়া পাঠের পর কোনো হাজি তার হজ দ্বারা পার্থিব সুনামকে নিজের লক্ষ্য বানাতে পারেন না।

হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হওয়ায় শয়তান হাজির নিয়ত নষ্ট করতে তৎপর হয়। এজন্যই নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হজের তালবিয়া পাঠ করেন তখন একথা বলেন, ‘হে আল্লাহ তোমার উদ্দেশ্যে হজ করতে যাত্রা শুরু করলাম, কোনো মানুষের সুনাম-সুখ্যাতি যেন আমাদের উদ্দেশ্য না হয়।’ (ইবনু মাজাহ)

জানার বিষয় হলো, হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। যিনি নিয়মিত নামাজ পড়েন তাকে বলা হয় ‘মুসল্লি’। যিনি হজের ফরজ আদায় করেছেন তাকে বলা হয় ‘হাজি’। জীবনে একবার হজ করে ‘হাজি’ বা ‘আলহাজ’ হয়ে যায়। কিন্তু প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ পড়ার পর কেউ নিজের নামের প্রথমে ‘মুসল্লি’ বা ‘আলমুসল্লি’ যোগ করে না।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সম্পাদক ও প্রকাশক : সোয়েব মজুমদার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭২৬ ২০২৮৩১
ঠিকানা : ৯২, মতিঝিল নিউ স্টার কমিউনিকেশন (২য় তলা), মতিঝিল বা/এ ঢাকা- ১০০০

ফোনঃ +৮৮০ ১৭২৬২০২৮৩১
ই-মেইল: dainikpujibazar@gmail.com

google.com, pub-1579532791932600, DIRECT, f08c47fec0942fa0