কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বৈশাখী উৎসবে ভরে উঠেছে হাজারো মুখ

দৈনিক পুঁজিবাজার বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে দেশের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণিল বৈশাখী উৎসবের। বৈশাখের প্রথম সকাল থেকেই লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী ও ইনানী পয়েন্টজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। হাজারো পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে সৈকতজুড়ে সৃষ্টি হয় প্রাণবন্ত ও রঙিন এক পরিবেশ।
রঙ-বেরঙের পোশাক, মুখভরা হাসি, আর হাতে পান্তা-ইলিশ—সব মিলিয়ে নববর্ষের সকাল যেন এক অপূর্ব আনন্দমেলায় পরিণত হয়। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বৈশাখী মেলা। লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
সকাল ১০টার পর থেকেই সৈকতে বাড়তে থাকে মানুষের ঢল। পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধবসহ সব বয়সী মানুষরা অংশ নেন এ উৎসবে। ঢাকার বাসাবো থেকে আগত পর্যটক রণধীর দিব্য বলেন, “সমুদ্র আর বৈশাখী উৎসব একসাথে উপভোগ করতে পারা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।” স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের আহমদ জানান, “এ উৎসব যেমন আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে, তেমনি পর্যটন শিল্পকেও উৎসাহ দেয়।”
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উৎসবমুখর পরিবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মী ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তায় কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কেউ হয়রানির শিকার হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন জানান, ঈদের পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম। “দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছেন। আমরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি,” বলেন তিনি।
এদিকে বৈশাখী উৎসব ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝেও ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় দেখা দিয়েছে চাঙাভাব, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।
নতুন বছর ঘিরে সবার প্রত্যাশা—ভবিষ্যত হবে আরও সুন্দর, হিংসা-বিদ্বেষের অবসান ঘটিয়ে দেশে আসবে সত্যিকারের আনন্দ ও শান্তি।