বাজারে সব ধরনের ডালের দাম চড়া, ভোক্তাদের চাপ বাড়ছে

পুঁজিবাজার ডেস্ক
রাজধানীসহ দেশের বাজারে সব ধরনের ডালের দাম চড়া অবস্থায় রয়েছে। মাসখানেক ধরে ক্রেতাদের দেশি মসুর, অ্যাংকর ও ছোলার ডাল কিনতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বড় ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই ‘কৌশল’ করে দাম বাড়াচ্ছে। তাদের দাবি, রমজানে দাম বাড়ালে সমালোচনা হয়, তাই চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই পাইকাররা দাম বাড়ানোর ‘সিস্টেম’ করছে।
অন্যদিকে আমদানিকারকদের ভাষ্য, বিশ্ববাজারে ডালের সংকট তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দেশীয় বাজারে। তবে নভেম্বর থেকে আমদানি বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসবে এবং রোজায় বাজার স্বাভাবিক থাকবে।
সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম বেড়েছে। কেন এ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, তা খতিয়ে দেখা হবে।
বাজারদর
শুক্রবার রাজধানীর তেজকুনিপাড়া, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে—
- দেশি মসুর (ছোট দানা) ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।
- আমদানি করা মসুর (বড় দানা) আগের মতোই ৯৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি।
- এক মাস আগে ছোলার কেজি ছিল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ থেকে ১১৫ টাকা।
- ছোলার ডাল কেজিপ্রতি বেড়ে হয়েছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা।
- অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
- মুগ ডাল পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায়।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে দেশি মসুরের দাম বেড়েছে ২ শতাংশ এবং ছোলার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ।
ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের মতামত
কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের মালিক রায়হান বলেন, “রমজানে দাম বাড়ালে ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ধরবে বড় ব্যবসায়ীদের। তাই তারা আগেভাগে কৌশল করছে।”
অন্যদিকে মিলার ও আমদানিকারকরা জানান, দেশে উৎপাদিত ডাল বড়জোর দুই মাস চলে, বাকি ১০ মাস আমদানি করতে হয়। আগে সিরিয়া, তুরস্ক ও ভারত থেকে ডাল আমদানি করা হলেও এখন তা বন্ধ। বর্তমানে দেশের চাহিদার বড় অংশই আসে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে, প্রয়োজনে মিয়ানমার থেকেও কিছু ডাল আমদানি করা হয়।
উৎপাদন বনাম চাহিদা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন একজন মানুষের খাদ্য তালিকায় গড়ে ৪৫ গ্রাম ডালের চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে বছরে সব ধরনের ডালের মোট চাহিদা দাঁড়ায় ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। এর মধ্যে স্থানীয় উৎপাদন হয় প্রায় ১০ লাখ টন। ফলে প্রতিবছর প্রায় ৬০ শতাংশ ঘাটতি থেকে যায়, যা পূরণে আমদানি করতে হয় প্রায় ১৭ লাখ টন ডাল।