“নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়ার নতুন পরিকল্পনা”

শিক্ষা মন্ত্রণালয় নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিভাজন তুলে দেওয়ার নতুন পরিকল্পনা করেছে। তবে, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে এ বছর এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয় বাছাইয়ের স্বাধীনতা
পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি, গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ধর্মসহ পাঁচ থেকে ছয়টি বিষয় বাধ্যতামূলক রাখা হবে। বাকি বিষয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার অনুযায়ী নির্ধারিত সংখ্যক বিষয় বেছে নিতে পারবে।
নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পদার্থবিদ্যা, রসায়নের মতো বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর পাশাপাশি অর্থনীতি বা মানবিক বিভাগের বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে। এতে শিক্ষার্থীদের একমুখী না হয়ে বহুমুখী পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পুরোনো ব্যবস্থা ফিরলেও পরিবর্তনের পরিকল্পনা
গত বছর স্থগিত হওয়া শিক্ষাক্রমে নবম শ্রেণিতে বিভাজন তুলে দেওয়া হলেও বিষয় বাছাইয়ের স্বাধীনতা ছিল না। সব শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক ১০টি অভিন্ন বিষয় পড়তে হয়েছিল। তবে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে এ বছর থেকে আবারও বিভাগ বিভাজন চালু হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা পুরোনো পদ্ধতিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়ছে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হলো শিক্ষকদের দক্ষতা ও অবকাঠামোগত ঘাটতি। এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, বিষয় নির্বাচনের এত ভিন্নতা থাকলে বিদ্যালয়গুলোতে সময়সূচি ও ক্লাস পরিচালনায় সমস্যা হতে পারে। তবে, এখন থেকে পরিকল্পনা করে এগোলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষাবিদদের মতামত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, “বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থার মডেল বাংলাদেশে হঠাৎ বাস্তবায়ন করা কঠিন। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দক্ষতার ঘাটতির কথা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত। তবেই এই পরিবর্তন ফলপ্রসূ হবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের বিষয় বাছাইয়ের স্বাধীনতা দিলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য আরও সুপরিকল্পিত হয়ে উঠবে। তবে, এটি বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে, এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে বাস্তবায়নের দক্ষতার ওপর।