সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারো নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “কোনো একটি আইন অনুযায়ী বৈধ এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধানকে পরিবর্তন করার কোনো অধিকার আমাদের কারো নেই। এমনটি হলে আগামী দুই বছর বা পাঁচ বছর পরে বারবার এই প্রক্রিয়ায় সংবিধান বদলের দাবি উঠবে।”
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সহযোগী সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-র ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির এই শীর্ষ নীতিনির্ধারক বলেন, “এখন কথা উঠছে যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ভিত্তিতেই নাকি আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়িত হয়ে যাচ্ছে। তবে সংবিধানের অংশ বাস্তবায়নের জন্য পরবর্তী সংসদের প্রয়োজন এবং সংবিধান সংশোধনের নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা হতে হবে। তাই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পরবর্তী জাতীয় সংসদকেই নিতে হবে।”
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মানুষ যে পিআর পদ্ধতি বোঝেই না, সেই পদ্ধতি কি আমরা চাইতে পারি? সুতরাং এসব কথাবার্তা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যারা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে, দেশের স্বার্থ ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছে, তাদের জনগণের স্বার্থে সঠিক পথে ফিরে আসতে হবে।”
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, “নির্বাচনে অস্থিরতা সৃষ্টি করা, বিলম্বিত করা বা বানচাল করার জন্য একটি শক্তি কাজ করছে, যার পক্ষে একটি রাজনৈতিক দল সক্রিয়। বাংলাদেশে যদি নির্বাচন বিলম্বিত হয়, তাহলে ফ্যাসিবাদের উৎপাত ঘটবে।”
রাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলের অভিসন্ধির কাছে মাথা নত করবে না জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাষ্ট্র কোনো ছেলেখেলা নয়। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে পারি না। এই রাষ্ট্রকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলতে দিতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের অভিসন্ধির কাছে আমরা কখনো মাথা নত করব না। দেশের জনগণই হচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মালিক।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যখনই বৈধ প্রক্রিয়ার কথা বলি, তখন বলা হয় জনগণের অভিপ্রায়ই চূড়ান্ত। হ্যাঁ, জনগণের অভিপ্রায়ই চূড়ান্ত। সেই অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। তবে সেই অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ দেখেছি। সেটিই বৈধ প্রক্রিয়া।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনডিপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হারুন।
এতে আরও বক্তব্য দেন অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণদলের সভাপতি এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
www.dainikpujibazar.com
কপিরাইট © দৈনিক পুঁজিবাজার ২০২৪ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত