লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ইলিশের অভাব, জেলে ও ব্যবসায়ীরা সংকটে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভরা মৌসুমেও লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে কাঙ্ক্ষিত রূপালী ইলিশ মিলছে না। প্রতিদিন ভোরে জাল হাতে নদীতে নামলেও অধিকাংশ জেলে ফিরছেন খালি হাতে, ফলে প্রায় অর্ধলক্ষ জেলে পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীরাও।
মেঘনার তীরবর্তী ২৫টি মাছঘাটে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন টন ইলিশ বিক্রি হলেও বর্তমানে সরবরাহ নেই বললেই চলে। গত অর্থবছরে জেলায় ২৩ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হলেও এবার সেই চিত্র উল্টো। যে সামান্য ইলিশ মিলছে, তার দাম এত বেশি যে মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
স্থানীয় জেলে আব্দুর রহমান, রবিন হোসেন, ইলিয়াস, মোস্তফা ও জুলফিকার জানান, বর্ষা মৌসুমে যেখানে প্রতিদিন ৮-১০ কেজি ইলিশ ধরা পড়তো, সেখানে এখন দিনে ২-৩ কেজিও মিলছে না। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, অনেকে ধারদেনা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
আড়ৎদার নিজাম উদ্দিন বলেন, “মাছ না থাকলে আড়ৎ চালানো দায়। গত তিন দিনে সামান্য মাছ উঠলেও বাজারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।” রপ্তানিকারক আব্দুল হক ব্যাপারী জানান, আগে ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ বাজারজাত হতো, এখন দিনে ১-২ মণও পাওয়া যায় না, আর যেটুকু আসে তার দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “নদীতে লবণাক্ততা হ্রাস, পানির প্রবাহে পরিবর্তন ও জলবায়ুর প্রভাবে ইলিশের প্রজনন ও আগমন কমেছে। তবে গত কয়েক দিনে কিছুটা মাছ ধরা পড়েছে, আশা করছি পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।”