আরবি শব্দ ‘জিহাদ’ অর্থ হলো কোনো কাজের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা-প্রচেষ্টা করা। যারা জিহাদ করেন, তাদের বলা হয় মুজাহিদ। পারিভাষিক অর্থে জিহাদ হলো আল্লাহ ও তাঁর রসুলের (সা.) দীনের বিরুদ্ধে আঘাত এলে তার প্রতিবাদে সাধ্য অনুযায়ী ঝাঁপিয়ে পড়া। কখনও সশস্ত্র লড়াই, আবার কখনও নিরস্ত্র প্রতিরোধ—সবই জিহাদের অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে এ সংগ্রামকে বলা হয়েছে ‘ফি সাবিলিল্লাহ’।
রসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে যারা জিহাদে অংশ নিতেন না, তাদের মুনাফিক মনে করা হতো। তবে আশ্চর্যের বিষয়, নবীজি (সা.) হালাল উপার্জনকেও জিহাদের মর্যাদায় তুলনা করেছেন। সাহাবিরা এ কথায় বিস্মিত হলেও আজকের বাস্তবতায় বিষয়টি গভীর অর্থ বহন করে। কারণ, শতভাগ হালাল উপার্জন করা এখন বিরল হয়ে পড়েছে।
বিদগ্ধ আলেম ড. ইউসুফ আল কারজাভি তাঁর ‘মাজালাতুল ইবাদাতি ফিল ইসলাম’ গ্রন্থে লিখেছেন, ইসলামে পরিবারের জন্য হালাল রিজিক উপার্জনকে উচ্চস্তরের ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, যদি কেউ পরিবারের জন্য উপার্জন করে, তবে সে আল্লাহর পথেই রয়েছে; এমনকি হালাল জীবিকার জন্য ব্যস্ত থাকলেও তা জিহাদের সমতুল্য। তবে যদি গর্ব বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্য থাকে, তবে তা শয়তানের পথে গণ্য হবে।
পবিত্র কোরআনেও হালাল রিজিক অনুসন্ধান ও জিহাদকে পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে (সুরা মুজাম্মিল, আয়াত ২০)। অর্থাৎ জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টা ইবাদত হতে পারে, তবে এর জন্য কিছু শর্ত মানতে হয়—
হাদিসে এসেছে—“আল্লাহতায়ালা প্রতিটি কাজে উৎকৃষ্টতা (এহসান) করতে নির্দেশ দিয়েছেন।” কাজেই পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা ফাঁকি দেওয়া গুনাহ হিসেবে গণ্য হবে।
লেখক : প্রিন্সিপাল, সেইফ এডুকেশন ইনস্টিটিউট
www.dainikpujibazar.com
কপিরাইট © দৈনিক পুঁজিবাজার ২০২৪ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত